” স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতা মনষ্কতা দুই সমান গুরুত্বপূর্ণ । কেবল স্বাধীন হলেই চলেনা , স্বাধীন মনষ্কতাও থাকতে হয় । স্বাধীন মনষ্কতাই স্বাধীনতার মূল উপজিব্য । স্বাধীনতা অর্জন করা যেমন কঠিন , সেই স্বাধীনতাকে বজায় রাখাও সমান কঠিন কাজ । আর এই দুই ব্যবস্থার সাথে সাথে অন্য যে ব্যবস্থাটির কথা মনে রাখতে হবে তা হল , সে স্বাধীনতাকে সমাজের সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া । সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করে স্বাধীনতা কোনো দিনও সম্পের্ণ হয় না । যদি স্বাধীন দেশের মানুষের মনে এই প্রশ্ন জাগে – স্বাধীনতা কাদের জন্য , তার মানে তখন বুঝতে হবে , যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে তার ফলাফল সাধারণের কাছে এখোনো পৌঁছায়নি । আর দেশের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে যদি এই প্রশ্ন জাগে , তখন সে খানে স্বাধীনতা থাকে বটে , তবে সেই স্বাধীনতার থেকে সমাজ অনেকটা বিচ্ছিন্ন । আর বিচ্ছিন্নতার সুযোগ যখন কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি সমষ্টি নিয়ন্ত্রন করতে চায় তখন স্বাধীনতার ধার থাকেনা । স্বাধীনতা মানে তো সম্পৃক্তি , একাত্বতা বোধ , এক জাগরণ , এক শৃঙ্খলা । সেই শৃঙ্খলা যখন লঙ্ঘিত হয় , তখন স্বাধীনতার অধিকার লঙ্ঘিত হয় । স্বাধীনতা যখন সমাজের কেবল মাত্র একটা বিশেষ শ্রেণির পৃষ্ঠপোশকতা করে তখন স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয় । সমাজের সাধারণ শ্রেণি যখন স্বাধীনতার সুফল থেকে বঞ্চিত হয় , তখন স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয় । সমাজ যখন ধর্মের অনুসাশনে অনুশাসিত হয় , তখন স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয় । সমাজ যখন ধর্মে ধর্মে বিভক্ত হয় , একে অন্যকে ভয় দেখিয়ে অথবা দমন পিড়ন চালায় , তখন স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয় । সমাজ যখন মানবতার পাঠ ভুলে যায় , তখন স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয় । সমাজে যখন অত্যাচার এবং শোষণ বেড়ে যায় , তখন স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয় । শাসক যখন শোষণের জন্য চোখ রাঙায় , তখন স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয় । সমাজের উঁচু শ্রেণি যখন নিচু শ্রেণির কথা ভুলে যায় , তখন স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয় । সমাজ যখন দেশের আইনকে আঙ্গুল দেখায় , তখন স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয় । ন্যায় বিচার যখন অর্থের কাছে হেরে যায় , তখন স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয় । সমাজে যখন যাত পাত বড়ো হয়ে ওঠে , তখন স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয় । সাধারণ মানুষ যখন অনেক বেশি শোষণের শিকার হয় , তখন স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয় । আর এই সব প্রবঞ্চনা যখন দিন দিন বেড়ে যায় , তখন স্বাধীনতা মনষ্কতা সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে , আর মানুষ স্বাধীনতা হারায় । — দেবাশীষ মল্লিক “
15-08-2018